কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাদ্দামের বিরুদ্ধে সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ


admin প্রকাশের সময় : নভেম্বর ২৬, ২০২৩, ৬:১১ পূর্বাহ্ন /
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাদ্দামের বিরুদ্ধে সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: ঘর,ভিজিএফ,মাতৃত্বকালীন ভাতা,ভিজিডি, বিধবা ভাতা,বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা বলে অন্তত শতাধিক দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তির কাছে থেকে জনপ্রতি চার হাজার থেকে বিশ হাজার করে টাকা নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। প্রতারণা ছাড়াও মাদক ব্যবসা করার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি হলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ১০ নং কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য এবং কাটদহচর গ্রামের মৃত মোশাররফ হোসেনের পুত্র সাদ্দাম হোসেন। সে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপ মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাদ্দাম হোসেন এলাকার দুস্থ,দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের প্রথমে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন। এরপর তাঁদের প্রয়োজন মোতাবেক বিভিন্ন সরকারি সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা নিয়েছেন। সে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি নিয়েছেন দশ হাজার থেকে বিশ হাজার টাকা। ভিজিডি,ভিজিএফ কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন চার থেকে ছয় হাজার টাকা। বয়স্ক ভাতা,বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন তিন থেকে চার হাজার টাকা। এছাড়াও জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করার কথা বলেও বিভিন্ন জনের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা নিয়েছেন। সাদ্দাম প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে ৬/৮ মাস আগে টাকা নিয়ে এইরকম প্রতারণা করেছেন বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগীরা আরও জানায়, সাদ্দাম টাকা নিয়ে ঘর,ভিজিএফ,মাতৃত্বকালীন ভাতা,ভিজিডি, বিধবা ভাতা,বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড কোনকিছুই দেননি। বরং ভুক্তভোগীদের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে সে এলাকা ছেড়েছেন। বহু কষ্টের ডিম,মুরগী ও ছাগল বিক্রির টাকা দিয়ে তাকে এখন হন্নে হয়ে খুঁজছে মানুষ। কিন্তু কোনভাবেই তাকে পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, জিন্নাহ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তাঁর সামনে ৬/৭ মাস আগে ৫০০০/৬০০০ টাকা নিয়েছেন। মিরাজুল ইসলাম নামে আরেকজন শ্রবণ প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ড করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন হাজার টাকা নিয়েছেন বলে আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাদ্দাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি সুবিধা দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন। আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে রাজি করিয়েও কারো কারো কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। টাকা নিয়ে প্রতারণা ছাড়াও এলাকায় মাদক ব্যবসা করেন তিনি । তার মাদক ব্যবসার বিষয়ে ইতোপূর্বে বিভিন্ন সুনামধন্য পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। উঠতি বয়সী ছেলেদের নিয়ে মাদক সেবনের সময় সে এলাকার মানুষের তাড়া খেয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।

এবিষয়ে অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাদ্দাম হোসেন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমার ছেলে অসুস্থ হওয়ায় তাকে নিয়ে দীর্ঘ ৬ থেকে ৭ মাস ঢাকাতে ছিলাম।আমি এই সব অভিযোগের বিষয়ে কিছু জানিনা।কয়েকদিন হলো কুষ্টিয়াতে এসেছি।আমার বিষয়ে যে অভিযোগ আসছে সব মিথ্যা। এছাড়াও তিনি প্রতিবেদককে ম্যানেজ করে তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত হতে যাওয়া সংবাদ বন্ধ করার চেষ্টা করেন।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার নিকট এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেন নাই। এই বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই। তবে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।